বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পুঁজিবাজার: ১৫ হাজার কোটি টাকা চাইল বিএসইসি  

  •    
  • ১৬ নভেম্বর, ২০২০ ২২:৫৬

গত ১২ নভেম্বর এসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের চিঠিতে বলা হয়, ‘পুঁজিবাজারে টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিতের লক্ষ্যে আইসিবিসহ অন্যান্য বাজার মধ্যস্থতাকারী তথা মার্চেন্ট ব্যাংকার, স্টক ব্রোকার, স্টক ডিলারের মূলধন ভিত্তি শক্তিশালী করাসহ সার্বিক সক্ষমতা বাড়ানো অত্যন্ত জরুরি।’

পুঁজিবাজারে তহবিল সংকট কাটাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে ১৫ হাজার কোটি টাকা চেয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

এর মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠানের জন্য পাঁচ হাজার কোটি টাকা এবং আইসিবিসহ স্টক ব্রোকার, স্টক ডিলার, মার্চেন্ট ব্যাংকের জন্য চাওয়া হয়েছে ১০ হাজার কোটি টাকা।

এ বিষয়ে সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংককে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে।

নিয়ন্ত্রক সংস্থার এই প্রস্তাবে পুরোপুরি সমর্থন জানিয়েছেন বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাইদুর রহমান। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘এমন একটি তহবিল গঠনের কথা আমরা অনেক আগে থেকে বলে আসছিলাম। দেরিতে হলেও বিএসইসি সেই উদ্যোগ নিয়েছে, যা নিঃসন্দেহে পুঁজিবাজারের জন্য সুখবর।’

বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠানো বিএসইসি চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের চিঠি

 

তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি-এ তহবিলের অর্থ বাজারে তারল্য সংকট কাটাতে সহায়তা করবে; লেনদেন বাড়বে।’

গত ১২ নভেম্বর বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের চিঠিতে বলা হয়, ‘পুঁজিবাজারে টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিতের লক্ষ্যে আইসিবিসহ অন্যান্য বাজার মধ্যস্থতাকারী তথা মার্চেন্ট ব্যাংকার, স্টক ব্রোকার, স্টক ডিলারের মূলধন ভিত্তি শক্তিশালী করাসহ সার্বিক সক্ষমতা বাড়ানো অত্যন্ত জরুরি।’

চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এই বিশেষ তহবিলে তিন শতাংশ থেকে চার শতাংশ সুদে ১০ বছর মেয়াদী ঋণ দেবে। এ তহবিলের বিনিয়োগের সুদের হার হবে চার শতাংশ, যার এক শতাংশ সিংকিং ফান্ডে জমা থাকবে।

সিংকিং ফান্ড এমন একটি তহবিল যা দায় পরিশোধ অথবা সম্পদ পরিবর্তনে কাজে লাগানো হয়।

চিঠিতে বলা হয়, এই তহবিলের মাধ্যমে উত্তোলিত অর্থ মার্চেন্ট ব্যাংকার, স্টক ব্রোকারস ও স্টক ডিলার ইস্যুকৃত করপোরেট বন্ড/ডেট সিকিউরিটিজে (যার কুপন হার হবে ছয় থেকে সাত শতাংশ) বিনিয়োগ করা হবে।

এতে বলা হয়েছে, গঠিত এ তহবিলের ব্যবস্থাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে আইসিবি।

বাংলাদেশ ব্যাংক। ফাইল ছবি

 

চিঠিতে বলা হয়, এই তহবিল গঠন ও বিনিয়োগের মাধ্যমে বাজারে তারল্য ও লেনদেনের পরিমাণ বাড়বে। এটা পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতা রক্ষায় সহায়ক ভূমিকা রাখবে। এতে সরকারের রাজস্ব আদায়ও কয়েক গুণ বাড়বে বলেও উল্লেখ করা হয়।

২০১০ সালে ধসের পর এখনও ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি পুঁজিবাজার। মাঝে মধ্যে সূচক, লেনদেন বাড়লেও কয়েক মাস পর আবার আগের পরিস্থিতিতে চলে যাওয়ায় বিনিয়োগকারীরা হতাশ।

বাজারে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগের অভাবের কথা বলছেন বাজার বিশেষজ্ঞরা। প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানও সম্প্রতি এই বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন একাধিকবার। তিনি মনে করেন, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ ছাড়া পুঁজিবাজার শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড়াবে না।

তবে সম্প্রতি নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসিকে ঢেলে সাজানো হয়েছে। এরপর বাজারে গতি কিছুটা বেড়েছে। তারপরও পুরোপুরি ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব হচ্ছে না।

বিএসইসির চেয়ারম্যানের চিঠিতে বলা হয়, আইসিবিসহ অন্যান্য বাজার মধ্যস্থাকারী মার্চেন্ট ব্যাংকার, স্টক ব্রোকার্স ও স্টক ডিলারের মূলধন ভিত্তি দুর্বল হয়ে পড়েছে। এ কারণে বাজার মধ্যস্থতাকারী হিসেবে এসব প্রতিষ্ঠান তাদের মক্কেল বা বিনিয়োগকারীদের পোর্টফোলিওতে সংরক্ষিত সিকিউরিটিজকে জামানত রেখে এর বাজারমূল্যের ওপর আগের মতো ঋণ সরবরাহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারছে না।

চিঠিতে বলা হয়, করোনাজনিত কারণেও সিকিউরিটিজের বাজার মূল্য কমে যাচ্ছে। এতে বিনিয়োগকারীর ইক্যুইটি ঋণাত্মক হয়ে যাচ্ছে। এর ফলে বাজার মধ্যস্থ্যতাকারী প্রতিষ্ঠানের ইক্যুইটিও এখন ঋণাত্মকমুখী।

বর্তমানে এদের ঋণাত্মক ইক্যুইটির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১২ হাজার কোটি টাকা। এর ফলে পুঁজিবাজার তারল্য সংকোচনের মুখোমুখি। পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর বিনিয়োগ সক্ষমতাও ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে।

এসইসির চেয়ারম্যান চিঠিতে বলেন, বর্তমানে স্বচ্ছ ও জবাদিহিতাপূর্ণ পুঁজিবাজার নিশ্চিতের লক্ষ্যে কমিশন নজরদারি কার্যক্রম উন্নতকরণ, প্রাথমিক গণপ্রস্তাব অনুমোদনে ও সেকেন্ডারি মার্কেটে লেনদেনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করেছে। এতে সুবিধাভোগী ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ হয়েছে।

বাজার মধ্যস্থতাকারী ও নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যেও সমন্বয় বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ফলে পুঁজিবাজারে লেনদেন ও সূচকে অনেকটা স্বাভাবিকতা ফিরে এসেছে।

২০১০ সালে ধসের পর পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা একাধিকবার সরকারের কাছে এই ধরনের তহবিল চেয়ে আসছিলেন।

সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে পুঁজিবাজারে অতিরিক্ত ২০০ কোটি টাকা করে বিনিয়োগের সুবিধা দিয়েছিল। তবে ব্যাংকগুলো সেভাবে বিনিয়োগ করেনি।

এ বিভাগের আরো খবর